Saturday, October 20, 2018

লগো কত প্রকার ও কি কি?

লগো হচ্ছে একটা ব্যবসায়ের অঙ্গ। একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বৈশিষ্ঠের মধ্যে লগোও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ঠ। যদিও এটি অতি ক্ষুদ্র একটি বৈশিষ্ঠ, কিন্তু একটি লগো আপনার ব্যবসায়ের সাফল্যের জন্য আনেক ক্ষেত্রে দায়ী। লগো আমদের জীবনের একটি অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। আপনি ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা করতে গেলে লগো চোখে পড়ে, আপনার গাড়িতে লগো, অফিসের কম্পিউটারে লগো। বলতে গেলে লগো আমাদের আশপাশটা দখল করে নিয়েছে। এবং আমাদের চারপাশে এক এক লগো এক এক রকম। কিন্তু সবলগোই কোন ছবি এবং বর্ণ এবং কোন শেইফ এর সমন্বয়ে তৈরি হয়। প্রত্যেক লগো আপনাকে আলাদা উপলদ্বি দিবে।

আমাদের আশেপাশের সমস্ত লগোকে গঠনগত দিক দিয়ে ৭  ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি লগোর আলাদা সুবিধা বা অসুবিধা রয়েছে। তাই আপনার ব্যবসায়ের শুরুতে আপনি কোন ধরণের লগো আপনার ব্যবসায়ের জন্য ঠিক করবেন সেটা ভেবে নেওয়া জরুরী। নিচে ৭ প্রকার লগোর নাম ও তার বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
১. ওয়ার্ডমার্ক
২. লেটারমার্ক
৩. পিক্টোরিয়াল মার্ক
৪. অ্যাবস্ট্রাক্ট মার্ক
৫. ম্যাসকট
৬. কম্বিনেশন মার্ক
৭. অ্যাম্বলেম

ওয়ার্ডমার্ক:


                       

 এধরণের লগো শুধু মাত্র একটি ব্যবসায়ের নামের উপর ভিত্তি করে ডিজাইন করা হয়। যেমন: google, cocacola এরকম আরো অনেক লগো রয়েছে যেগুলো কোম্পানির নামে ডিজাইন করা। এই লগোর প্রধান উদ্দেশ্য হল কোম্পানির নামকে ব্র্যান্ড করা। ওয়ার্ডমার্ক লগোতে কোন প্রতীক বা কোন গ্রাফিক নিদর্শণ দেখা যায়না। শুধু মাত্র ফন্ট এবং কালার দিয়েই এই লগো ডিজাইন করা হয়। কোন কম্পানির সংক্ষিপ্ত এবং সতন্ত্র নামের সাথে এই ধরণের লগো ভাল মানায়। ওয়ার্ডমার্ক লগো নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য যদি কাস্টমারের কাছে আপনার ব্যবসার প্রচার করতে চান। তবে কিছু শর্ত মেনে ওয়ার্ডমার্ক লগো ব্যবাহার করা দরকার। ওয়ার্ডমার্ক লগো ব্যবহার করার জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম ছোট হওয়া জরুরী। যাতে লগো ডিজাইনিংয়ে সুবিধা হয়। এবং কম্পানির নাম যেন ইউনিক হয়, যাতে কম্পানির নাম মানুষের মনে একি ধরণের কোম্পানি সম্পর্কে যে ধারণা রয়েছে সেটা বদলে দিতে পারে।

লেটারমার্ক:



একটি লেটারমর্ক লগোতে সাধারণত এক থেকে চারটা অক্ষর বা বর্ণ থাকে, যেগুলো কোম্পানির নামের প্রথম অক্ষর। এধরণের লগো সংক্ষিপ্ত হয়। কোন ছবি বা শেইফ এসব লগোতে ব্যবহার করা হয়না। শুধুমাত্র টেক্সট এবং ফন্ট এর উপর ভিত্তি করে এই লগো ডিজাইন করা হয়। লেটারমার্ক লগো হচ্ছে টাইফোগ্রাফি ভিত্তিক লগো। যখন একটি কোম্পানির নাম বড় হয় সেই কম্পানির নামের প্রত্যেক শব্দের প্রথম অক্ষর নিয়েই লেটারমার্ক লগো বানানো হয়। যেমন:-National Aeronautics And Space Administration  এই নামের যদি কোন লগো হয় তাহলে খুব অদ্ভুত দেখাবে। আর এটাকে NASA লিখার ফলে একটা মানানসই ডিজাইন করা হয়েছে। লেটারমার্ক হচ্ছে একটা বাক্যের যেটা একটি কোম্পানির নাম সেটার সংক্ষিপ্ত রুপ। লেটারমার্ক লগো দেখতে এবং উচ্চারণগত দিক দিয়ে অনেকটা অন্যান্য লগোর চাইতে সহজ হয়।

পিক্টোরিয়াল মার্ক:



পিক্টোরিয়াল মার্ক লগো হচ্ছে একটি প্রতীক যেটা গ্রাফিক ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। এধরণের লগোতে কোন রকম লিখা বা কোম্পানির নাম থাকেনা। গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে কয়েকটা শেইফকে ব্যবহার করে একটি ছবি বা প্রতীক দাড় করানো হয়। পিক্টোরিয়াল মার্ক লগো সাধারণত নতুন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে খুব একটা ব্যবহার করা হয়না। কারণ এই লগোতে কোম্পানির নাম এড়িয়ে যাওয়া হয়। পিক্টোরিয়াল মার্ক লগোর দ্বারা কাস্টমারদের বার্তা দেওয়া হয় কোম্পানির কেমন পন্য বাজারে রয়েছে । পিক্টোরিয়াল মার্ক লগো কাস্টমার দেখলে কোম্পানির পন্য সম্পর্কে কাস্টমারের মনে ধারণা চলে আসে। তবে নতুন কোম্পানির বেলাই সেটা ঘটেনা।

অ্যাবস্ট্রাক্ট মার্ক:



অ্যাবস্ট্রাক্ট মার্ক প্রায় পিক্টোরিয়াল লগোর মতই। এটিও গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যেমে বিভিন্ন শেইফ ব্যবাহার করে  তৈরি করা হয়। এধরণের লগো গোলাকার, ত্রিভুজাকার, চতুর্ভুজাকার বা কোন লাইন, যেকোন শেইফের হতে পারে। অ্যাবস্ট্রাক্ট লগোতে শেইফের ডানে, বামে, উপরে, নিচে কোন লেখা বা কোম্পানির নাম দেওয়া যায়। আর অ্যাবস্ট্রাক্ট লগোর একটির সাথে সাথে মিল রেখে একি কোম্পানির আরো দু-একটি লগো ডিজাইন করে বাজারে প্রকাশ করা হয়। অ্যাবস্ট্রাক্ট লগোর সুবিধা হচ্ছে একবার যদি কম্পোনির লগো বাজারে পরিচিতি পায়, তাহলে সেই লগোর একি শেইফের লগো মানুষের চোখে পড়লেও তারা চিনতে পারে।


ম্যাসকট:



ম্যাসকট শব্দটা শোনতেই যেন মনে কোন কার্টুনের ছবি বা ফানি কিছু মনে আসে। ম্যাসকট লগো বিভিন্ন কালার দ্বারা কিছুটা কার্টুনিশ, এবং কোন ফানি শেইফ বা ছবি যোগ করে লগো ডিজাইন করা করা হয়। ম্যাসকট লগো শিশু বা ফ্যামেলিকে টার্গেট করে ডিজাইন করা হয়। ম্যাসকট লগো খেলাধুলার পণ্যতেও ব্যবহার করা হয়।

কম্বিনেশন মার্ক:



ওয়ার্ডমার্ক, লেটারমার্ক, পিক্টোরিয়াল মার্ক, অ্যাবস্ট্রাক্ট মার্ক, এবং ম্যাসকট লগোর সমন্বয়ে একটি কম্বিনেশন মার্ক লগো তৈরি করা হয়। কম্বিনেশন মার্ক লগো হল কোন ছবি বা পণ্যের সমন্বয়। কম্বিনেশন মার্ক লগো হল এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় লগো। নতুন কোন ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের জন্য কম্বিনেশন  মার্ক লগো খুব জনপ্রিয়। কারণ কম্বিনেশন মার্ক লগোতে ওয়ার্ড ব্যবহার করে কোম্পানির নাম এবং শেইফ ব্যবহার করে কোম্পানির একটা প্রতীক দাড় করনো যায়। যেমন বার্গার কিং থেকে যদি বার্গার কিং নামটা ফেলে দেওয়া হয় তারপরও মানুষ এটাকে বার্গার কিংয়ের লগো হিসেবেই বুঝে নেবে। ঠিক একিভাবে যদি বার্গারের ছবিটাও তুলে ফেলা হয় তারপরও বার্গার কিং নামেই মানুষ চিনে নিবে।

অ্যাম্বলেম:



অ্যাম্বলেম লগো হচ্ছে লগো ডিজাইনের সবচেয়ে পুরোনো সংস্করণ। প্রথম প্রথম যখন লগো ডিজাইন ব্যপারটা মানুষের মনে আসে তখন এই অ্যাম্বলেম জাতীয় লগো দিয়েই লগো ডিজাইন শুরু হয়। অ্যাম্বলেম জাতীয় লগো গুলো কিছু লেখাকে ডিজাইন করে একটা শেইফ তৈরী করা হয়। সাধরণত অ্যাম্বলেম লগো কোন পুরোনো বা ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে অ্যাম্বলেম লগো খুব একটা দেখা যায়না। অ্যাম্বলেম লগোতে একটি অসুবিধা হল যখন এই লগো ছোট করা হয়, তখন লগোটা বুঝা যায়না। লগোর লিখাগুলো পড়তে অসুবিধা হয়। যদি কোন কোম্পানির  ওয়েবসাইটের ফেব আইকন হিসেবে ব্যবহার করা হয় সেখানে অ্যাম্বলেম লগো বেমানান দেখায়। অ্যম্বলেম সাধারণত সিল এবং ক্রেস্টে ব্যবহার করতে সুবিধা হয়। তাছাড়া অ্যাম্বলেম লগো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়।





No comments:

Post a Comment